হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ :
বিজিবি টেকনাফে পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকা মুল্যের ইয়াবা উদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে। একটি অভিযানে ইয়াবা পাচারকারী মিয়ানমারের ২ জন রোহিঙ্গাকে আটক এবং ১টি মোবাইল সেট জব্দ করা হয়েছে। টেকনাফের দমদমিয়া থেকে ১৩ কোটি ৭ লক্ষ ৪১ হাজার ৫০০ টাকা মুল্যের ৪ লক্ষ ৩৫ হাজার ৮০৫ পিস ইয়াবাসহ ২ জন মিয়ানমারনাগরিক রোহিঙ্গাকে আটক করেছে বিজিবি। ইয়াবাসহ আটক রোহিঙ্গারা হলেন মিয়ানমারের মংডু মাঙ্গালা মৃত সিরাজুল মোস্তফার পুত্র মোঃ কামাল আহমদ (৪৫) ও বাসেত আলীর পুত্র মোঃ ইলিয়াস (৩০)। এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। নিষিদ্ধ ঘোষিত মাদক ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজ দখলে রাখার অপরাধ এবং অবৈধভাবে মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় পৃথক ২টি মামলা দায়ের করতঃ ধৃত আসামীদেরকে জব্দকৃত ইয়াবা ট্যাবলেট ও মোবাইল ফোনসহ টেকনাফ মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তাছাড়া টেকনাফের ‘ইয়াবা পল্লী’ খ্যাত সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া থেকে বিজিবি অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা মুল্যের ৬০ হাজার পিস ইয়াবা ইদ্ধার করেছে। তবে রাতের অন্ধকারের সুযোগে ইয়াবা চোরাচালানীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক পরিচালক লেঃ কর্ণেল এসএম আরিফুল ইসলাম জানান ‘বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, ইয়াবার একটি চালান হ্নীলা ইউপিস্থ নেচারপার্ক বরাবর নাফ নদীর কিনারা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে দমদমিয়া বিওপির হাবিলদার মোঃ লুৎফর রহমান, বিজিবিএম, পিবিজিএমএস এর নেতৃত্বে একটি টহল দল নেচারপার্ক বরাবর নাফ নদীর কিনারায় অবস্থিত কেওড়া বাগানে গমন পূর্বক ওঁৎ পেতে থাকে। ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৩.২০ ঘটিকায় টহল দল মায়ানমার হতে নাফ নদীর শুন্য লাইন অতিক্রম করে একটি হস্তচালিত নৌকা আসতে দেখে কিনারায় আসার জন্য অপেক্ষারত থাকে। অতঃপর উক্ত নৌকাটি নাফ নদীর কিনারায় আগমন করতঃ ২ টি বস্তা নৌকা থেকে নামানোর সাথে সাথে সন্দেহ হওয়ায় টহলদল তাদের আটকের নিমিত্তে ধাওয়া করে। এমতাবস্থায় ইয়াবা পাচারকারীরা বস্তা ফেলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে টহলদল অক্লান্ত পরিশ্রম করে ২ জন ইয়াবা পাচারকারীকে ২ বস্তা ইয়াবাসহ আটক করতে সক্ষম হলেও ৬ জন ইয়াবা পাচারকারী দ্রুত গতিতে নৌকায় আরোহন করে নাফ নদীর শুন্য রেখা অতিক্রম করে মায়ানমারের অভ্যন্তরে চলে যায়। পরবর্তীতে টহল দল ইয়াবা পাচারকারীদের নিকট হতে প্রাপ্ত ইয়াবা ভর্তি ২টি বস্তা খুলে গণনা করে ১৩ কোটি ৭ লক্ষ ৪১ হাজার ৫০০ টাকা মুল্যের ৪ লক্ষ ৩৫ হাজার ৮০৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ২ হাজার টাকা মূল্যমানের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন স্যাম্পনী (মডেল-ডি ১৪০) ১টি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। নিষিদ্ধ ঘোষিত মাদক ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজ দখলে রাখার অপরাধ এবং অবৈধভাবে মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করতঃ ধৃত আসামীদেরকে জব্দকৃত ইয়াবা ট্যাবলেট ও মোবাইল ফোনসহ টেকনাফ মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে’।
তিনি আরও জানান ‘২৩ সেপ্টেম্বর রাতে ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ নাজিরপাড়া বিওপির হাবিলদার মোঃ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টহল দল নাজিরপাড়া এলাকায় নিয়মিত টহলে গমন করে। পরবর্তীতে ২৪ সেপ্টেম্বর আনুমনিক রাত ২টায় টহলদল বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন ইয়াবার একটি চালান টেকনাফ ইউপিস্থ গফুর প্রজেক্ট এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে। উক্ত সংবাদ প্রাপ্তির সাথে সাথে টহলদল দ্রুত গফুর প্রজেক্ট এলাকায় গমন পূর্বক ওঁৎ পেতে থাকে। আনুমানিক ৪.৫০ টায় টহল দল দুইজন লোককে ব্যাগ হাতে করে আসতে দেখে চ্যালেঞ্জ করলে সাথে সাথে তারা পানি ও কর্দমাক্ত মাঠের মধ্য দিয়ে দ্রুত দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এমতাবস্থায় টহলদল তাদের পিছু ধাওয়া করলে এক পর্যায়ে তারা তাদের হাতে থাকা ব্যাগ দুইটি ফেলে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে পার্শ¦বর্তী কেওড়া বাগানে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে টহলদল ইয়াবা পাচারকারী কর্তৃক ফেলে যাওয়া ব্যাগ দুইটি তল্লাশী করে ১কোটি ৮০ লক্ষ টাকা মূল্যমানের ৬০ হাজার পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকৃত ইয়াবা ট্যাবলেটগুলো ব্যাটালিয়ন সদরে জমা রাখা হয়েছে। যা পরবর্তীতে উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মিডিয়া কর্মীদের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হবে’।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।